মানব বিবর্তনের ইতিহাসে ভাষা হলো মানুষের মনের ভাব আদান-প্রদানের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। মানুষের ভাষীক ক্ষমতার উৎপত্তি মানব বিবর্তনের ইতিহাসের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। আজ থেকে প্রায় তিন লক্ষ বছর আগে আফ্রিকা অঞ্চল থেকে আধুনিক মানুষের বিবর্তন ঘটে এবং তারা পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে। তবে ভাষা তৈরীর জন্য প্রয়োজনীয় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ-উপাঙ্গের উপযুক্ত কাঠামো তৈরি হয় তার অনেক পরে, মোটামুটি এক লক্ষ বছর আগে। প্রায় ৭০ হাজার বছর আগে হোমো সেপিয়েন্স-এর উদ্ভবের সময়কাল থেকে বিভিন্ন গুহাচিত্র ও শিলালিপিতে মানুষের ভাষার ব্যবহারের প্রমাণ মেলে- যা মানুষের ভাবের আদান-প্রদানের সহায়ক। এই বিশেষ বৈশিষ্ট্য অন্যান্য সব প্রাণী থেকে মানুষকে আলাদা করে ছিল।
পৃথিবীর ভাষাগুলোর সেই আদি রূপকে বলা হয় ভাষা বংশ। দুটি ভিন্ন ভৌগলিক খন্ডের মানুষের ভাষা এক হয়ে গেলেই তাকে ভাষা বংশ বলে। ইন্দো-ইউরোপীয়, চীনা-তিব্বতীয়, আফ্রিকীয়, সেমীয়-হেমীয়, দ্রাবিড়ীয়, অস্ট্রো-এশীয় প্রভৃতির মতোই অন্যতম ভাষা বংশ ‘ইন্দো-ইউরোপীয়’ উৎপত্তি আজ থেকে প্রায় ৫০০০ বছর আগে। ইংরেজি, জার্মান, ফরাসি, হিস্পানি, রুশ, পর্তুগিজ, ফারসি, হিন্দি, উর্দু, নেপালি, সিংহলি প্রভৃতির মতো বাংলা ভাষাও এই ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা-পরিবারের সদস্য। একই ancestor বা পূর্বগ ‘বঙ্গকামরূপী’ থেকেই বাংলা এবং অহমিয়া, ওড়িয়া ও মৈথিলী ভাষার উদ্ভব ঘটেছে। অর্থাৎ এরা সকলেই নিকট ‘আত্মীয়া’ ভাষা। ‘ধ্রুপদী ভাষা’ হিসেবে ঘোষিত সংস্কৃত, প্রাকৃত ও পালির সঙ্গে বাংলা ভাষার এক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। মূলত ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা-পরিবারের ভাষা বিবর্তনের মধ্য দিয়েই আজকের বাংলা ভাষার রূপ পাওয়া গিয়েছে।
ড. সুকুমার সেন তাঁর ‘ভাষার ইতিবৃত্ত’ গ্রন্থে লিখেছেন- ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা বংশ প্রথমে মূলভাষার পুরঃকন্ঠ্য ধ্বনির পরিবর্তনের ভিত্তিতে ২টি গুচ্ছে ভাগ হয়ে যায়। যথা- কেন্তম গুচ্ছ ও শতম গুচ্ছ। যে ভাষাগুলিতে কন্ঠ্যধ্বনি থেকে গেছিল সেগুলি কেন্তম এবং যে ভাষাগুলিতে ‘শ’ বা ‘স’ ধ্বনিতে রূপান্তরিত হয়েছিল সেগুলি শতম গুচ্ছ। ইউরোপীয় অঞ্চলের গ্রীক, ল্যাটিন, জার্মানিক, ক্লেল্টিক ও তোখারিও প্রভৃতি হলো কেন্তম গুচ্ছের ভাষা। অপরদিকে আর্য, বল্টো-স্লাবিক আলবাণীয় এবং আর্মেনীয় প্রভৃতি ভারতীয় অঞ্চলের ভাষাগুলো শতম গুচ্ছের। এই শতম ভাষাগুচ্ছ থেকেই ভারতীয় বিভিন্ন ভাষার বিবর্তন। শতম ভাষা প্রকৃতিগতভাবে প্রথমেই জাতি ভিত্তিক আলাদা হয়ে গেছিল; যেমন- আরব জাতির ভাষা আরবীয় ভাষায়, মিশর জাতির ভাষা মিশরীয় ভাষায়, ইরান জাতির ভাষা ইরানীয় ভাষায় এবং বৃহৎ ভারতীয় ভূ-খন্ডের মানুষের ভাষা ভারতীয় ভাষায়। কিছুকাল পরে ভারতীয় ও ইরানীয় ভাষার সংমিশ্রণে গঠিত ইন্দো-ইরানীয় ভাষা গোষ্ঠীর ভাষা, আর্যদের ভারতে বিস্তার কালে গঠিত ভারতীয়-আর্য ভাষার ভিতর দিয়ে আধুনিক বাংলা ভাষায় বিবর্তিত হয়েছে।
ভারতবর্ষে আর্যদের আগমন আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব ১৫০০ অব্দে। আর্যদের ভাষার সঙ্গে প্রথমে ভারতীয় ভাষার সংমিশ্রণে তৈরী হয়েছিল ‘ভারতীয়-আর্য’ নামে নতূন একটি ভাষা। ভারতীয়-আর্য ভাষার প্রাচীন নমুনা পাওয়া যায় আর্যদের দ্বারা রচিত ‘ঋকবেদ’-এ, রচনাকাল মোটামুটি খ্রিষ্টপূর্ব ১২০০ অব্দ। প্রায় ৩০০ বছর ধরে প্রচলিত এই আদি ভারতীয়-আর্য ভাষা থেকেই বাংলাসহ অন্যান্য কতগুলি ভারতীয় ভাষার উদ্ভব ঘটে। বর্তমান সময়কাল থেকে হিসেব করলে ভারতীয়-আর্য ভাষার জীবনকাল প্রায় ৩৬০০ বছর। পরবর্তীকালে বিভিন্ন সময়ে কথা বলার ভাষা বা কথ্য ভাষা ও লেখার ভাষা বা লেখ্য ভাষা আলাদা হতে শুরু করে। বর্তমান দিনে যেমন বাংলা ভাষাতেই কথা বলা বিভিন্ন এলাকা রংপুর, বরিশাল, চট্টগ্রাম, মেদিনীপুর প্রভৃতি স্থানের কথ্য ভাষা আলাদা আলাদা; অথচ লেখ্য রূপ সব ক্ষেত্রেই একই। প্রাচীনকালেও ভারতীয়দের কথ্য ভাষা রূপ ছিল ‘প্রাকৃত’ এবং প্রচলিত আর্য-ভারতীয় ভাষার লিখিত রূপ ছিল ‘সংস্কৃত’। বৈদিক যুগে রচিত ‘ঋকবেদ’-এর ‘বৈদিক ভাষা’র সংস্কারের মধ্য দিয়ে তৈরি বলেই সেটি ‘সংস্কৃত’। বৈদিক ভাষার প্রচলন খ্রিষ্টপূর্ব ১২০০ অব্দে হলেও সংস্কৃত ভাষার প্রচলন আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০ অব্দে। ভাষার কথ্য রূপ ‘প্রাকৃত’র উদ্ভব ষষ্ঠ শতকে ব’লে অনুমান।
বাংলা ভাষার উৎপত্তি সংস্কৃত ভাষা থেকে ব’লে দাবি হলেও, প্রকৃত অর্থে বাংলা ভাষার উৎপত্তি ভারতীয়-আর্য ভাষার লেখ্য রূপ ‘সংস্কৃত’ থেকে নয়, বরং কথ্য রূপ ‘প্রাকৃত’ থেকে। প্রকৃতিগতভাবে সংস্কৃত ও বৈদিক কোনোটিই কথ্য ভাষা নয়, এগুলি সাহিত্যের ভাষা বা লেখার ভাষা। কথ্য ভাষা প্রাকৃত আবার এলাকা ভিত্তিক ভিন্নতা তৈরি করেছিল। গৌড়ীয় এলাকার ভাষা ছিল ‘গৌড়ীয় প্রাকৃত’ এবং মগধ এলাকার ভাষা ছিল ‘মাগধী প্রাকৃত’। ভাষাবিদ ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে বাংলা ভাষার উৎপত্তি মাগধী প্রাকৃত থেকে, আনুমানিক ১০ম শতকে। তবে ভাষাবিদ ড. মহম্মদ শহিদুল্লাহ ভিন্ন মত পোষণ করে বলেন, বাংলা ভাষার উৎপত্তি গৌড়ীয় প্রাকৃত থেকে ৭ম শতকে।
কথ্য ভাষা গৌড়ীয় প্রাকৃত এবং মাগধী প্রাকৃত একটা সময় এসে বিকৃত হয়ে পড়েছিল। ভাষার এই বিকৃত রূপকেই ‘অপভ্রংশ’ বলে। ফলে মাগধী প্রাকৃত থেকে সৃষ্টি হল ‘মাগধী অপভ্রংশ’ এবং গৌড়ীয় প্রাকৃত রূপ নিল ‘গৌড়ীয় অপভ্রংশে’। ভাষা গবেষণা থেকে জানা যায়, এই দুই অপভ্রংশের সমন্বিত রূপ থেকে পরবর্তী সময়ে সৃষ্টি হয়েছিল একটি নতুন ভাষা। যার নাম ‘বঙ্গকামরূপী’। এই বঙ্গকামরূপী থেকেই উৎপন্ন আজকের বাংলা, মৈথিলী, অসমীয়া এবং ওড়িয়া প্রভৃতি ভাষার। বাংলা ভাষার লিখিত রূপের প্রাচীনতম নিদর্শন ‘আলো-আঁধারি’ বা ‘সন্ধ্যাভাষা’- ‘চর্যাপদ’। ১৯০৭ সালে নেপালের রাজ গ্রন্থাগার থেকে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মহোদয়ের আবিষ্কৃত এই চর্যাপদকে কেউ কেউ ওড়িয়া ভাষার আদি সাহিত্য হিসেবে দাবি করেছেন। ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় ও প্রবোধ চন্দ্র বাগচী প্রমুখের মতে চর্যাপদ রচনার সময়কাল মোটামুটি খ্রিষ্টিয় দশম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী কোন একটি সময়। যদিও ভাষাবিদ ড. মহম্মদ শহীদুল্লাহ ও রাহুল সংকৃত্যায়ন প্রমুখের মতে চর্যাপদের রচনাকাল খ্রিষ্টিয় অষ্টম শতকে। সুতরাং চর্যাপদকে বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন লিখিত পুঁথি বা পান্ডুলিপি ধরলে বাংলা ভাষার বয়স মোটামুটি ১৬০০ বছর। এছাড়াও বাংলা ভাষার প্রাচীনত্বের নিদর্শনগুলির মধ্যে অন্যতম খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতকে বাংলাদেশের বগুড়ার মহাস্থানগরের ব্রাহ্মী লিপিতে লেখা শিলালিপি, ঐতরেয় ব্রাহ্মণ গ্রন্থে বঙ্গদেশ প্রসঙ্গ, সম্রাট অশোকের আমলে গিরনার শিলালিপি, সংস্কৃত-চীনা অভিধানে উল্লেখিত বাংলা শব্দ প্রভৃতির।
কোনও ভাষার সুনির্দিষ্ট কতগুলি বৈশিষ্ট্য তাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা প্রদান করে।
- ভাষায় প্রাচীনত্ব:- লিপিবদ্ধ ইতিহাস কিংবা পান্ডুলিপির বয়স যদি ১,৫০০ থেকে ২০০০ বছর হয়।
- মূল্যবান ঐতিহ্য:- সেই ভাষার আদি সাহিত্যের একটি বিশেষ নমুনা যা কয়েকটি প্রজন্ম ধরে ওই ভাষার মানুষের কাছে মূল্যবান ঐতিহ্য হিসেবে বিবেচিত।
- মৌলিকত্ব:- সাহিত্য চর্চার নিজস্ব ঐতিহ্য, যা অন্য কোন ভাষায় কথা বলা গোষ্ঠীর কাছ থেকে সংগ্রহ করা নয়।
- আধুনিক থেকে স্বতন্ত্র:- আদি ভাষার সঙ্গে আধুনিক ভাষা ও সাহিত্যের ফারাকের সুস্পষ্টতা।
ভারত সরকারের ২০০৪ সালের ১২ই অক্টোবর ঘোষিত এই মানদণ্ড অনুসারে তামিল ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়। তামিল ভাষা দ্রাবিড়ীয় ভাষা বংশ থেকে উৎপন্ন একটি ভাষা এবং এই ভাষার প্রাচীনতম নিদর্শন পাওয়া গেছে খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০০ অব্দ থেকে ২০০০ অব্দের। ২০০৫ সালের ২৫শে নভেম্বর ভারত সরকার নিয়মের পরিবর্তন করে ভাষার পান্ডুলিপি অথবা ভাষা ইতিহাসের বয়স ১০০০ বছর থেকে বাড়িয়ে ১৫০০-২০০০ বছর করে দেয়। বাকি সব নিয়ম একই থাকে। সেই নিয়মেই ২০০৫ সালে সংস্কৃত ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা লাভ করে। ভাষাটি ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা গোষ্ঠী থেকে উৎপন্ন এবং এর প্রাচীন নিদর্শনের সময়কাল খ্রিষ্টপূর্ব ১৫০০ থেকে ৫০০ অব্দ। ২০০৮ সালে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয় কন্নড় ও তেলেগু ভাষাকে। এই দুটি ভাষাই দ্রাবিড়ীয় ভাষা বংশ থেকে উৎপন্ন এবং এদের প্রাচীনতম নিদর্শন খ্রিষ্টপূর্ব ৬০০ অব্দ থেকে ৪৫০ অব্দে। ২০১৩ সালে ধ্রুপদী ভাষা হিসেবে ঘোষিত মালায়ালাম ভাষাটিও দ্রাবিড়ীয় ভাষা বংশ থেকে উৎপন্ন একটি ভাষা এবং এর প্রাচীনতম নিদর্শন খ্রিষ্টপূর্ব ৮১৩ অব্দের। ওড়িয়া ভাষাকে ২০১৪ সালে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেয় ভারত সরকার। এই ওড়িয়া ভাষাকে বাংলা ভাষারই নিকট আত্মীয় বলা চলে এবং এটি ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা বংশ থেকে উৎপন্ন। ২০২৪ সালে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার আইনের কিছু পরিবর্তন করে পূর্বের তৃতীয় ধারা- “কোন ভাষার সাহিত্যচর্চা মৌলিক হতে হবে এবং তা অন্য কোন ভাষায় কথা বলা গোষ্ঠী থেকে সংগ্রহ করা যাবে না”, মূলত এই অংশকে বাদ দেওয়ার ফলেই বাংলা ছাড়াও বাকি চারটি ভাষা প্রাকৃত, পালি, অসমিয়া ও মারাঠি ভাষা ‘ধ্রুপদী ভাষা’র মর্যাদা পায়।
মধ্য ভারতে আনুমানিক ষষ্ঠ শতকে কতকগুলি ভাষার সম্মিলিত রূপ নিয়ে আর্য ভাষার কথ্য রূপ ‘প্রাকৃত’র উদ্ভব হয়েছিল। দীর্ঘ ১৮০০ বছর সময়কালে এই প্রাকৃত ভাষার বিবর্তনে মোট তিনটি রূপ পাওয়া গেছে; সেগুলি হলো- আদিরূপ বা পালি, মধ্যরূপ বা প্রাকৃত এবং আধুনিক রূপ বা অপভ্রংশ। এই প্রাকৃত ভাষা এরপরে মহারাষ্ট্রী, সৌরসিনি, অর্ধ-মাগধী, মাগধী ও পৈশাচিনী প্রভৃতি কতগুলো শাখায় বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। মগধ অঞ্চলের মাগধী প্রাকৃত এবং গৌড়ীয় অঞ্চলের গৌড়ীয় প্রাকৃত’র মতই মহারাষ্ট্র অঞ্চলের প্রাকৃত ভাষা ছিল মহারাষ্ট্রীয় প্রাকৃত। ভাষা বিবর্তনে প্রাকৃত এর পরবর্তী ধাপ ছিল অপভ্রংশ, বিস্তারকাল খ্রিষ্টিয় ৮ম শতক থেকে ১৭শ শতক। ভাষাবিদগণ যে গৌড়ীয় ও মাগধী অপভ্রংশের কথা উল্লেখ করেছেন তার সম্মিলিত রূপ ‘বঙ্গকামরূপী’ থেকেই সরাসরি ওড়িয়া, বাংলা এবং অসমীয়া ভাষার উদ্ভব ঘটেছে। ২০১৪ সালে ওড়িয়া যে ‘ধ্রুপদী ভাষা’র মর্যাদা পেয়েছিল, ২০২৪-এ এসে একই ‘অ্যানসেস্টর’ থেকে উৎপন্ন বাংলা এবং অসমীয়া ‘ধ্রুপদী ভাষা’র মর্যাদা পেল। অপরদিকে মারাঠি ভাষার উৎপত্তি বাংলা ও ওড়িয়া ভাষার মতো সংস্কৃত ভাষার কথ্য রূপ প্রাকৃত থেকেই। মহারাষ্ট্রীয় প্রাকৃত থেকেই উদ্ভব হয়েছে মারাঠি ভাষা। খ্রিষ্টিয় ১ম ও ২য় শতকে সাতকাহন রাজ্যের সরকারি ভাষা ছিল এই মহারাষ্ট্রীয় প্রাকৃত। ১৫শ ও ১৬শ শতকে এসে মহারাষ্ট্রীয় প্রাকৃত আধুনিক মারাঠি ভাষার রূপ লাভ করে। অপরদিকে পালি ভাষা খ্রিষ্টিয় ৩য় শতকে উৎপন্ন একটি ভাষা। ভাষা বিবর্তনের ধারায় এটি প্রাকৃত ভাষার ঠিক আগের রূপ। অর্থাৎ সংস্কৃত ও প্রাকৃত’র মধ্যবর্তী ভাষারূপ হলো পালি। পালি শব্দটি সিংহলি। গৌতম বুদ্ধের সকল বাণী এবং পরবর্তীকালে বুদ্ধ ঘোষ’সহ অন্যান্য বৌদ্ধ পন্ডিতদের বাণী পালি ভাষাতে প্রচার হয়েছিল।
২০২৪ সালে বাংলাসহ আরও পাঁচটি ভাষার ‘ধ্রুপদী’ মর্যাদালাভ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের ভারতীয় প্রাচীন ভাষাগুলির বিস্তার, সংরক্ষণ ও গবেষণার নতুন দিগন্ত উন্মোচনের রাস্তা প্রশস্ত করার সঙ্গে সঙ্গে দেশের অখন্ডতা, পরম্পরা, সংস্কৃতি রক্ষার প্রতি দায়বদ্ধতার ঘোষণাকে আরও জোরালো করেছে।