Dr. Syama Prasad Mookerjee Research Foundation

বাবাসাহেব আম্বেদকর ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের ভাবনা

অতি সাম্প্রতিককালে দেশের রাজনৈতিক দল কংগ্রেস হঠাৎ করে ভীষণ রকমে ‘দলিত প্রেমে উদ্বেলিত’ হয়ে উঠেছে এবং ড.  বাবা সাহেব আম্বেদকর ইস্যুতে দেশবাসীকে ভুল পথে চালিত করছে। বাবা সাহেবের দীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাস এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময়কালে তাঁর প্রতি কংগ্রেসের আচরণ পরম্পরা এর ঠিক উল্টো কথা বলে। সেই ১৯৫৬ সালে বাবা সাহেবের মৃত্যুর পর কংগ্রেসের দীর্ঘ শাসনকালে তাঁকে ‘ভারতরত্ন’ দেওয়ার কথা একবারও ভাবেনি গান্ধী পরিবার ও তাদের উত্তরাধিকারীরা। অথচ কংগ্রেসের ষড়যন্ত্রে ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ১৯৫২ সালের নির্বাচনে বাবা সাহেবকে হারানো নারায়ণ কাজরোলকরকে ‘পদ্মভূষণে’ ভূষিত করেছে সেই কংগ্রেস সরকার ১৯৭০ সালে। খসড়া সংবিধানের মূল ভাবনাকে পদদলিত করে ৭৫ বার সংবিধান সংশোধন করেছে কংগ্রেস পরিচালিত কেন্দ্র সরকার।  মূল প্রস্তাবনায় না থাকা ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দকে জোর করে ঢুকিয়ে ইন্দিরা গান্ধীর ১৯৭১ সালের ‘জরুরি অবস্থা’র পাপকে লঘু করার চেষ্টা করেছে। সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পৈতৃক সম্পত্তিতে নারীর সমান অধিকারের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে পেশ করা ‘হিন্দু কোড বিল’ (১৯৫১) সংসদে পাস করতে না দিয়ে  জাতির আগ্রগমন কয়েক শতাব্দি পিছিয়ে দিয়েছিল কংগ্রেস। সেই অপমান ও ক্ষোভে জওহরলাল মন্ত্রী সভা থেকে পদত্যাগ করেছিলেন বাবা সাহেব। ১৯৯০ সালে তাঁকে ‘ভারতরত্ন’ দেওয়া ভিপি সিং মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তে সংসদের ‘কেন্দ্রীয় হলে’ তাঁর মূর্তি স্থাপনের প্রতিবাদ জানিয়েছিল সেই কংগ্রেস দল। মুসলিম তোষণের মাধ্যমে রাজনীতিতে টিকে থাকতে চাওয়া জাতীয় কংগ্রেস ঐতিহাসিক ‘পুনা চুক্তি’ (১৯৩২) শুধু বিরোধিতা করেনি, গান্ধী নিজে আমরণ অনশনের ভীতি সঞ্চার করে ভারতবর্ষে দলিত তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের ক্ষমতা খর্ব করেছিলেন। ইতিহাস বলছে চরম দ্বিচারিতায় ভরা মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীকে সারা জীবনে কখনও ‘মহাত্মা’ বলে অভিহিত করেননি ভারতের সংবিধানের এই স্রষ্টা পুরুষ।

দীর্ঘ সময় ধরে ভারতবর্ষের মুসলিম শাসন ও পরে খ্রিস্টান শাসনকালে দেশের প্রাচীন সংস্কৃতি, পরম্পরা ও ঐতিহ্যের যে অবমূল্যায়ন ঘটেছিল, ধ্বংস হয়ে যাচ্ছিল ভারতবর্ষের যা কিছু নিজস্ব, তার বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ ছিল বাবা সাহেবের। ‘হিন্দু’ সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও পুনরুৎজীবন এবং স্বাভিমান ও বৈভবশালী ভারত নির্মাণ আদর্শকে সামনে রেখে ১৯২৫ সালে যে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল তার প্রতি বাবা সাহেবের আবেগ এবং সমর্থনের হাজারো প্রমাণ ইতিহাসের পাতায় খুঁজে পাওয়া যায়।

রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রচারক, ‘পদ্মভূষণ’ এবং ভারতীয় মজদুর সংঘের প্রতিষ্ঠাতা এবং ডক্টর আম্বেদকরের নির্বাচনের ‘ইলেকশন এজেন্ট’ দত্তপন্ত  ঠেংরিজির ‘ড. আম্বেদকার ও সামাজিক কান্তি কি যাত্রা’ এবং ‘একাত্মতা কি পূজারী বাবা সাহেব আম্বেদকর’ গ্রন্থে ড. আম্বেদকরের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সম্পর্ক এবং কার্যক্রমের বিস্তৃত ব্যাখ্যা রয়েছে। রয়েছে স্বয়ং সেবক সংঘের দর্শন ও আত্মনির্ভরশীল রাষ্ট্র গঠন লক্ষ্যের সঙ্গে বাবা সাহেবের আত্মিক যোগাযোগের অনুভবী বিশ্লেষণ। বিভিন্ন ঘটনা উল্লেখ করে তিনি দেখিয়েছেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সার্বিক বিকাশ ও বিস্তৃতির মধ্য দিয়েই যে ভারতের সংস্কৃতি, অর্থনীতি ও সামাজের পরিপূর্ণ বিকাশ সম্ভব, তা বিশ্বাস করতেন বাবা সাহেব। সংঘের তৃতীয় সর সংঘচালক পূজনীয় বালা সাহেব দেওরসের বক্তব্যে ড. বাবা সাহেবের সারা জীবনের আদর্শের প্রতিধ্বনি শোনা যায়- “অস্পৃশ্যতা যদি ঘৃণ্য না হয়, তাহলে পৃথিবীতে আর অন্য কোন কিছুই ঘৃণ্য নয়।”

১৯৩৯ সালে পুনায় আয়োজিত সংঘ শিক্ষাবর্ষের এক কার্যক্রমে একদিন এসেছিলেন বাবা সাহেব। সংঘের সর সংঘচালক হেডগেওয়ারজি সেদিন উপস্থিত ছিলেন সেই কার্যক্রমে। মোটামুটি ৫২৫ জন পূর্ণ গণবেশধারী স্বয়ং সেবকের সেই কার্যক্রমে উপস্থিত হেডগেওয়ারজিকে বাবা সাহেব  জিজ্ঞেস করলেন- “এদের মধ্যে অস্পৃশ্য কতজন আছেন?” অসম্ভব এক আত্মবিশ্বাসে তিনি বাবা সাহেবকে  বলেছিলেন- “আপনিই জিজ্ঞেস করুন।” সমবেত স্বয়ং সেবকদের উদ্দেশ্যে বাবা সাহেব যখন আন্তরিক প্রশ্ন রাখলেন- “আপনাদের মধ্যে অস্পৃশ্য কতজন আছেন, আমার সামনে আসুন।” তাঁদের মধ্যে এক জনেরও তাঁর আহ্বানের কোন  প্রতি উত্তর এলো না। ভীষণ আশ্চর্য ও আনন্দিত হয়ে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, “আপনাদের মধ্যে মুচি, মেথর, চামার, ঝাড়ুদার জাতির দলিত সম্প্রদায়ের কতজন আছেন?” প্রায় এক’শ স্বয়ংসেবক  এগিয়ে এসে দাঁড়ালেন বাবা সাহেবের সম্মুখে। তিনি অন্তর দিয়ে অনুভব করলেন, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ তাদের আদর্শে সমাজের জাতপাত, উচ্চ-নিচ মুছে দিয়ে মানবতার জয়গান গাইতে সক্ষম হওয়া এক উজ্জ্বল সংগঠন। সংঘই প্রতিষ্ঠা করেছে বাবা সাহেবের ‘মানবতাই ধর্ম’ আদর্শকে, ‘দলিত’ মানে ‘অস্পৃশ্য’ নয় বিশ্বাসকে।

ঘটনা ১৯৩৩ সালে সংঘের ওয়ার্ধা ক্যাম্পে। সেবারে সংঘের আবাসিক সেই শাখায় উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং গান্ধীজি। হেডগেওয়ারজি উপস্থিত ছিলেন সেদিনের সেই শাখায়। গ্রীষ্মের সেই সময়ে গান্ধী একটি আশ্চর্যের বিষয় লক্ষ্য করলেন। আদুল গায়ে ‘বাহ্মণ নিশান’ পৈতে বিহীন আবাসিকদের খাদ্য পরিবেশন করছেন একদল পৈতেধারি ব্রাহ্মণ। হেডগেওয়ারজির প্রতি ঘোর লাগা এক প্রশ্ন গান্ধীজি’র- “এটা সম্ভব হলো কি করে?” মুচকি হেঁসে হেডগোয়ারজি বললেন, “আজ বিকেলের আর এক কার্যক্রমে আসুন একবার।” বিকেলে মাঠে গিয়ে গান্ধীজি দেখলেন তুমুল উত্তেজনাময় কাবাডি খেলা চলছে। পৈতে ধারী একদল ব্রাহ্মণ পা ধরে টান দিচ্ছে দলিত যুবকের। অসম্ভব এই দৃশ্যে সেদিন এক ঐতিহাসিক উক্তি করেছিলেন গান্ধীজি- “আমি সারা জীবন যে আদর্শকে সামনে রেখে এগিয়েছি এবং যাকে বাস্তব রূপায়নের স্বপ্ন দেখেছি, আজ অবাক হয়ে দেখলাম, আপনার রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ সেটা বাস্তবে করে দেখিয়েছে।”

গুরুজির সঙ্গে একান্ত কথপোকথনে ভারতীয় রাজনীতিতে কমিউনিজমের বিপদ সম্পর্কে সচেতন করেছিলেন বাবা সাহেব। ১৯৪৮ সালে গান্ধী হত্যার পরে সেপ্টেম্বর মাসে সংঘের দ্বিতীয় সর সংঘচালক মাধবরাও সদাশিবরাও গোলওয়ালকর (গুরুজি) সঙ্গে দিল্লিতে সাক্ষাৎ করেছিলেন বাবা সাহেব। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের উপর জারি হওয়া রাষ্ট্রীয় নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে বল্লভ ভাই প্যাটেল, ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী প্রমুখের সঙ্গে তিনিও শুধু সোচ্চার হয়েছিলেন তাই নয়। এক ঐতিহাসিক উক্তিতে বলেছিলেন- “এই সমাজ ব্যবস্থায় পীড়িত ও বঞ্চিতদের ভেতরে পুঞ্জিভূত ক্ষোভ একটি  স্বাভাবিক ঘটনা। এই ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে বিদেশাগত মতবাদ ‘কমিউনিজম’ ইতিমধ্যে বিস্তার লাভ শুরু করেছে, দেশ এবং দেশের ভবিষ্যত মঙ্গলের জন্য এটা কোন ভাবেই হওয়া উচিত হবে না। রাষ্ট্রীয় ভাবনায় সংঘ যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে তার প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা আছে। আমাদের সচেতন থাকতে হবে কমিউনিজমের বিপদ সম্পর্কে। দলিত সমাজ ও কমিউনিজমের মধ্যে যেমন বাবা সাহেব দাঁড়িয়ে আছেন, তেমনি উচ্চবর্ণ ও নিম্ন বর্ণের মাঝে দাঁড়িয়ে আছেন হেডগেওয়ারজি।”

হাস্যকর একটি যুক্তি দিয়ে সংঘ বিরোধীরা অভিযোগ করেন হিন্দু ধর্মের অস্পৃশ্যতা এবং অধোগতির প্রতি বিতশ্রদ্ধ হয়ে অনুগামীদের নিয়ে বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণের অনুষ্ঠান, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রতি অসন্তোষের কারণে, সংঘের কেন্দ্রীয় শাখা নাগপুরে করেছিলেন। অথচ বাবা সাহেব স্বয়ং নিজের জীবদ্দশায় বলেছেন, “এই অভিযোগ কোন অংশেই সত্য নয়।” তাঁর ধর্ম পরিবর্তনের এই অনুষ্ঠান নাগপুরে করার অন্যতম কারণ গোটা দেশের কেন্দ্রীয় স্থান এই নাগপুর। উত্তর কিংবা দক্ষিণ ভারত থেকে সহজে প্রতিনিধিদের আসার জন্যই এই স্থান বিবেচনা। আরেকটি দিক অবশ্যই স্বীকার্য, দক্ষিণ ভারত কিংবা পশ্চিমবঙ্গসহ উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যান্য স্থানে হিন্দু ধর্মের ভেতরে অস্পৃশ্যতা যতটা প্রকট ছিল, তুলনায় মহারাষ্ট্রসহ তথাকথিত গো-বলয়ে তা অধিক তীব্র ছিল। তাই প্রতিবাদ সংগঠিত করার জন্য নাগপুরকে বেছে নিয়েছিলেন।

১৯৩৫ সালে আইন পড়ার সময় মহারাষ্ট্রের দোপালীতে সংঘের শাখায় যাতায়াত করতেন বাবা সাহেব।  তার আগে মহারাষ্ট্রের পুণেতে প্রথম শারীরিক শাখাতে উপস্থিত হয়ে প্রথম বারের মতো সাক্ষাৎ হয়েছিল সংঘের প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ কেশব বলিরাম হেডগেওয়ারজি’র সঙ্গে। ১৯৩৭ এর মহারাষ্ট্রের করহাট শাখাতে সংঘের প্রতিষ্ঠা দিবস বিজয়া দশমীতে সংঘের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে যে বক্তব্য রেখেছিলেন তা আজও সমান প্রাসঙ্গিক।

হিন্দু কোড বিলের মাধ্যমে হিন্দু মহিলাদের ক্ষমতায়নের ও সমানাধিকারের ঐতিহাসিক আইন প্রনয়নের স্বপ্ন কংগ্রেসের গোঁয়ার্তুমি ও অসহযোগিতার জন্য পাশ করাতে না পারার ক্ষোভে পদত্যাগ করেছিলেন জওহরলাল মন্ত্রীসভা থেকে। যদিও কখনও কোন পদের জন্য  অপেক্ষা করেননি বাবা সাহেব। এই ঘটনার ঠিক পরেই ১৯৫৩ সালে, বিশ্ব হিন্দুসভার প্রতিষ্ঠাতা মোরপন্থ পিংলে, সংঘের অখিল ভারতীয় কার্যকর্তা বাবা সাহেব সাঠে, প্রধ্যাপক ঠক্কার প্রমুখের সঙ্গে ঔরাঙ্গবাদে বাবা সাহেবের সাক্ষাৎ হয়। ১৯৫২ সালে সাধারণ নির্বাচনের পর কংগ্রেস দল জওহরলালের নেতৃত্বে ক্ষমতায় বসেছে। দেশ গঠনের সেই সূচনাকালে দাঁড়িয়ে তিনি বুঝেছিলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের আদর্শই আগামী দিনে দেশকে সঠিক দিশায় এগিয়ে নিয়ে যাবে। সেই বৈঠকে অত্যন্ত আগ্রহ নিয়ে খোঁজ নিয়েছিলেন সংঘের মোট শাখার সংখ্যা, প্রতি শাখায় অংশগ্রহণকারী স্বয়ংসেবকের সংখ্যা প্রভৃতি। তথ্য সকল নেওয়ার পর মোরপন্থ পিংলেজিকে অনুযোগের সুরে বলেছিলেন, “আপনাদের ও টি সি (অফিসার ট্রেইনিং ক্যাম্প) প্রতক্ষ করে বুঝেছি, আজ পর্যন্ত সংঘের শক্তি ও শাখা যতটা বাড়া উচিত ততটা হয়নি। আমি চাই সমাজের প্রয়োজনে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের শক্তি আরও বাড়ুক।” তিনি বিশ্লেষণ করে বলেছিলেন- “১৯২৫ সালে প্রতিষ্ঠিত সংঘের শাখার সংখ্যা ১৯৫৩ সালে দাঁড়িয়ে ২৭-২৮ লক্ষে! কত সময় লাগবে সমাজকে পরিবর্তন করতে! আমি মৃত্যুর আগে দেখে যেতে চাই, সংঘ সমাজকে নতুন একটি দিশা দিতে পেরেছে।”

তাঁর সেই আদর্শকে পাথেয় করে প্রথমে জনসংঘ ও পরে ভারতীয় জনতা পার্টির কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে আজ পর্যন্ত। দেশের প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে এবং অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে সেই প্রতিজ্ঞাই সাম্প্রতিক সময়েও বারবার উচ্চারণ করেছেন। ২০১৪ সালের নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার ২০১৫ সালে বাবা সাহেবের সংবিধানের খসড়া পেশের দিন ২৬ শে নভেম্বরকে ‘সংবিধান দিবস’ ঘোষণা করেছে। তাঁর জন্মস্থান মধ্যপ্রদেশের মহু, উচ্চ শিক্ষার স্থান লন্ডনের বাড়ি, বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণের নাগপুর, মহাপরিনির্বাণ স্থান দিল্লি এবং শ্মশানস্থল চৈত্য ভূমি মুম্বাই আজ ‘পঞ্চতীর্থ’। সামাজিক ন্যায়তা ও সামাজিক সমতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আম্বেদকর আন্তর্জাতিক কেন্দ্র। মূলত সংঘ আদর্শে পরিচালিত বিজেপি সরকার তাদের প্রায় ২০ বছরের শাসনে মাত্র আট বার সংবিধান সংশোধন করেছে। যাদের মধ্যে অন্যতম- ২০১৭ সালে জি এস টি চালু, সর্বভারতীয় তপশিলি কমিশন কে সাংবিধানিক মর্যাদা প্রদান (২০১৯), একই বছরে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণির জন্য সংরক্ষণ ব্যবস্থা এবং লোকসভা ও বিধানসভায় তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য সংরক্ষণের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব এবং ২০২৩ সালে মহিলা সংরক্ষণ বিল প্রভৃতি প্রণয়ন। সংবিধানের মূল সুরকে পাথেয় করে অবলুপ্ত করেছে ৩৭০ ধারা, রদ হয়েছে তিন তালাকের মতো অমানবিক প্রথা।

শূদ্র জাগরণ, সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের উন্নয়ন, হিন্দু সংস্কৃতির ও বিশ্বাসের পুনর্জাগরণ এবং তার ঐতিহ্য লালনের মধ্য দিয়েই পরিপূর্ণ ভারত নির্মাণ সম্ভব। আর এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে বাবা সাহেবের আদর্শ এবং তাঁর তৈরী গর্বের সংবিধানই হোক আমাদের এগিয়ে চলার প্রতিজ্ঞা।

Author

(The views expressed are the author's own and do not necessarily reflect the position of the organisation)